সাব্বির আহম্মেদ

বিজয় আমার

প্রবন্ধ, মতামত
লেখাটি শেয়ার করুন

সাব্বির আহম্মেদ
ইতিহাস বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

 

দীর্ঘশ্বাস,চারিদিকে মৃত্যুর মিছিল আর অজস্র মায়ের কান্না; ইতিহাসের পাতা হাতড়িয়ে দেখলাম এটা আমারই পূর্বপুরুষের রক্ত!

কি নিদারুণ! কি বেদনাবিধুর! এ যেন কুহেলিকা আর অমাবস্যাতিথি! (১৯৪৭ থেকে ১৯৭১)।

বিশ্ববিবেক যেখানে পুঁজিবাদ আর সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠায় স্নায়ুযুদ্ধের হলি খেলায় মত্ত, সেখানে আমরা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত,রাজনৈতিক অধিকার নেই, সামাজিক অধিকার নেই,অর্থনৈতিক মুক্তি নেই। আমার মা-বোনের কান্না দেখার মতো কেউ নেই?

বায়ান্নের’ বৃহস্পতিবার আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ প্লাবিত হলো,বিনিময়ে পেলাম আমার প্রিয় মাতৃভাষা।

শেরে বাংলা,মাওলানা ভাসানী আর হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দীর যুক্তফ্রন্ট;২১ দফার ইশতেহার।

৫৬’র সংবিধান বাংলা আমার প্রাণ।

আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্র আর শৈরশাসনের মন্ত্র বলে জাতীয়তাবাদ যেখানে মৃতপ্রায় সেখানে “বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো”দীপ্ত শিখার হুংকার।

বঙ্গবন্ধুর “ছয় দফা” যেন বাঙালির মুক্তির সনদ, ১২’শ মাইল অতিক্রান্ত দূরত্বের বিপ্লবী ক্ষেপণাস্ত্র। বিদ্রোহী কবিতার ভাষায় বলতে হয় এ যেন, “টর্পেডো,ভীম-ভাসমান মাইন”।

ঐ যে দেখ মিথ্যা মামলা আগরতলা, ষঁড়যন্ত্রের নতুন ফাদঁ। ছাত্রদের ১১ দফা, গণঅভ্যুত্থানের জোয়ারে আইয়ুব খানের হলো পতন ।

“হ্যারিকেন গোর্কী” আর “মনপুরা ৭০” একই সূত্রে গাঁথা। ৭০’র নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দাপুটে জয়,ইয়াহিয়া খানের ছলনা আর মানবে না জাতি,ভাঙবে এবার লোহার শিকল জ্বালবে মশাল বাতি।

দে এবার ক্ষমতাটা, রাষ্ট্র কি তোর বাপের?

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ,বঙ্গবন্ধুর ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা আর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, মহান সংবিধানের তফসিল (পঞ্চদশ সংশোধনী)।

জেনারেল টিক্কা খানের “অপারেশন সার্চলাইট” গণহত্যার কালো থাবা। রাজারবাগ থেকে পিলখানা হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ যেন নিকষ কালো অন্ধকার, অমাবস্যা আর বাঙালি নিধন কর্মসূচি। কি নির্মম এ রাত্রি! রক্তের বন্যায় ভেসে যায় আমার বাঙালিত্ব।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র,বৈদ্যনাথ তলার ভবের পাড়া (মুজিবনগর সরকার),অপারেশন জ্যাকপট,প্রধান সেনাপতি : এম.এ.জি ওসমানীর ১১ টি সেক্টর ঐতিহাসিক উপাখ্যান।

দীর্ঘ নয় মাস “জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রাম”। ১লক্ষ ৪৭ হাজর ৫৭০ বর্গ কিলোমিটারের প্রাণের প্রিয় বাংলাদেশ।

মহান বিজয় তোমার, ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১।

শ্রদ্ধা নিবেদন করছি,

৭ জন বীরশ্রেষ্ঠ, ৬৮ জন বীর উত্তম,১৭৫ জন বীরবিক্রম, ৪২৬জন বীর প্রতিকের প্রতি। এইচ ওডারল্যান্ড সহ সকল মুক্তিযুদ্ধের সৈনিকদের প্রতি সশস্ত্র সালাম।

জর্জ হ্যারিসন,পন্ডিত রবি শংকর, এ্যালেন গিনেসবার্গ তোমাদের অবদান ভোলার নয়।

দীর্ঘজীবী হও বাংলাদেশ।

 


লেখাটি শেয়ার করুন

Leave a Reply