মিলনের পথে 15, 16, 17

মিলনের পথে: পঞ্চদশ, ষোড়শ, সপ্তদশ পর্ব

উপন্যাস
লেখাটি শেয়ার করুন

সুদীপ ঘোষাল,
পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিমবঙ্গ।

 

পনেরো

যাইহােক ‘রূপা অপেরা’ দেড় বৎসর ব্যাপী রামকৃষ্ণ মিত্রের ‘সােনার সানাই।’ বইয়ের মহড়া দিল। অরিন্দম ছিল এক ছদ্মবেশী ভিক্ষুর অভিনয়ের। এবার রূপা অপেরা-র ডাক পড়েছে নদীয়ার একটি শহরে। রূপা অপেরার এখন দশ হাজার টাকা, পার নাইট রেট। বাসভর্তি অপেরা পার্টি হাজির ছিল সন্ধ্যা সাত ঘটিকায়। বই শুরু হবে নয় ঘটিকায়। অরিন্দম ও অপরূপা প্রথমত শহরটি একটু দেখার জন্যে বেরিয়েছে। পথমধ্যে এক মারাত্মক দুর্ঘটনার কবলে পড়লাে তারা। একটি মােটর সাইকেল এসে তাদের রিক্সার সঙ্গে সংঘর্ষ বাধায়। এর ফলে অরিন্দম লাফিয়ে নেমে পড়লেও অপরূপা পায়ে ভীষণভাবে আঘাত লাগে। অরিন্দম কথা না বাড়িয়ে মােটর সাইকেল আরােহীর সাহায্যে রূপাকে নার্সিংহােমে নিয়ে যায়।

ডাক্তারবাবু প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের ছেড়ে দেন। | এদিকে গােপালবাবু অরিন্দমকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে দিয়েছেন। বই শুরু হতে আর আধ ঘণ্টা বাকী। কনসার্ট পড়ে গিয়েছে। কিন্তু অরিন্দমের পাত্তা নেই। অরিন্দমের দ্বিতীয় দৃশ্যে প্রবেশ। সুদর্শন সান্যাল এ সুযােগ হাত ছাড়া করলাে না। বারবার গােপালবাবুর কানে কুমন্ত্রণা দিতে থাকলাে গােপালবাবুর উপর দোষ চাপিয়ে বললাে আপনিই ওকে বাড়িয়ে মাথায় তুলেছেন নিজেকে অরিন্দম বড্ড বেশী বড় মনে করে। গােপালবাবু একে প্রেসারের রােগী ক্রমে তার ক্রোধ বেড়ে যাওয়াতে তার প্রেসার বাড়তে থাকলাে। অরিন্দম যখন এলাে তখন গ্রীন রুম সাইলেন্ট। অপরূপা এক পাশে বসে পড়লাে। অরিন্দম দ্রুত মেকআপ সেরে নিয়ে মঞ্চে প্রবেশ করেলা।

মানসিকভাবে প্রস্তুত না থাকায় অরিন্দম খুবই বিব্রত বােধ করতে থাকলাে, ফলে ডায়ালগ  মিশ করল। সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের মধ্যে গুঞ্জন শােনা গেল। কোনওরকমে অরিন্দম মঞ্চ থেকে বেরিয়ে এলাে। অপরূপার কাছে এসে দাঁড়ালাে। অপরূপা অভয় দিলাে। উভয়ে তাকিয়ে দেখলাে সুদর্শন সান্যালের মৃদু হাসির ঝিলিক আর তার পার্শ্বে দন্ডায়মান হিরু এবং ব্যথিত গােপালবাবুকে। পরবর্তী দৃশ্যগুলিতে অরিন্দম মােটামুটি ভালাে অভিনয় করলাে কিন্তু অপরূপার অভিনয় ভালাে হল না। এদিকে সুদর্শন সান্যাল ফাঁকা মাঠে গােল দেওয়ার মতাে সেই রাত্রির শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান পেল। অপরূপা ও অরিন্দম বিষন্ন চিত্তে বাসে উঠে পিছনের সীটে বসলাে। সুদর্শন সান্যাল ও গােপালবাবু বসলেন পিছনের সীটে। সুদর্শন সান্যালের ভালাে অভিনয়ের জন্যে অরিন্দম এবং অপরূপা কিন্তু তাকে শাবাসি দিতে ভুল করলাে না। কিন্তু সুদর্শন সান্যাল প্রত্যুত্তরে কিছুই বললাে না।

এমন  মনের বাসনা চরিতার্থ করার জন্য সাধনা লাগলাে। সাত দিন পরে সে গােপালবাবুর বাড়ি গিয়ে দেখে  তিনি আলােচনায় ব্যস্ত।  অপরুপা পাশের ঘরে। অরিন্দম ঘরে প্রবেশের অনুমতি নিয়ে গোপালবাবু পাশের চেয়ারে বসলাে। সান্যাল উঠে তখন পাশের ঘরে গেল। গোপালবাবু তিরস্কারের সুরে বলে উঠলেন, তোমার আর অভিনয় শেখা হলনা।” গােপালবাবুর এই কথাটি অরিন্দমের বুকে তীব্র তিরের মত বিদ্ধ হল। অরিন্দমের চোখ জল ছলছল করে উঠলাে। গােপালবাবু বলে যেতে লাগলেন অভিনয় করতে গেলে দায়িত্ববান হতে হয় এবং অনুশীলন করতে হয়। তােমার মধ্যে এই দুটোর কোনটাই দেখছি না।  গােপালবাবুকে বিছানায় দেখে বলে উঠলাে, কাকাবাবু আপাতত এখন কেমন আছেন তার দেহে হাত দিয়ে দেখলাে অরিন্দম ‘হার্টবিট’ অনেক বেশি এবং উত্তাপ অস্বাভাবিক। কোন কথা না বলে অরিন্দম ডাক্তার ডাকতে চলে গেল। এসেই দেখে সুদর্শন সান্যাল ডাক্তার নিয়ে এসেছে।

একা অপরূপা বিছানার পাশে বসে আছে। অরিন্দম ডাক্তারকে ফি দিয়ে বিদায় দিল। অপরূপা অরিন্দমকে দেখে উঠে এসে তার বুকে মাথা রেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লাে। তার কথা শুনে অরিন্দম জানতে পারল গােপালবাবু ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং তিনি চার মাসের বেশী বাঁচবেন না। | ‘রূপা অপাের পুনরায় চার রাত্রি যাত্রা করার ডাক পেলাে। অরিন্দম কিন্তু গােপালবাবুর শরীরের জন্যে যেতে চাইলেন না। সুদর্শন সান্যাল এখন পার্টির সকল দায়িত্ব নিয়েছে এবং সকলের দেখাশােনা করছে। গােপালবাবুর পরামর্শে এবং তার আদেশে শেষ পর্যন্ত অরিন্দম যেতে রাজী হলাে। কিন্তু সঙ্গে অপরূপা এবং গােপালবাবু যাবেন না, ফলে অরিন্দম ব্যথায় জর্জরিত।

 

ষোল

অশােক ও শােভন গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর থেকে দুই বৎসর অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু দুজনের কারাের কোনাে চাকরী হয়নি। শুধুমাত্র তাদের টিউটোরিয়াল হােমের উন্নতি হয়েছে। তাদের এই হােম থেকে অনেক ছাত্র ফাস্ট ডিভিশনে মাধ্যমিক পাশ করেছে এমন কি দুই একজন ছাত্রছাত্রী স্টারও পেয়েছে। ফলে তাদের হােমের’ ছাত্রছাত্রী সংখ্যা এখন অনেক। দুইবেলা তারা হােম খােলে। সকাল সাত ঘটিকা থেকে দশ ঘটিকা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ছয় থেকে নয় ঘটিকা পর্যন্ত। প্রত্যেক গ্রুপে তিরিশ জন করে ছাত্রছাত্রী থাকে দুইজনে পনেরজন করে প্রতি সপ্তাহে চারদিন শিক্ষাদান করে। শুধুমাত্র নব এবং দশম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীই এখন পড়াশুনা করে। দুইবেলায় মােট ৬০জন ছাত্রছাত্রী পঁচিশ টাকা করে দেয়।

মােট দেড় হাজার টাকার মতাে মাইনে দেয়। এতে দুজনের মােটামুটি অপেশাদারি খুশী মন। দিন  যায় এবং তাদের পড়াশুনার অভ্যাসও বজায় থাকে। এটাই ছিল তাদের প্রধান উদ্দেশ্য।তা হােক দেবিকা এবং অপর্ণা দুইজনেই এখন বারাে ক্লাসের গন্ডী পেরিয়ে কলেজে  ভর্তি হয়েছে। অপর্ণা তার দাদা অশােককে দেবীকার কথা এই প্রথম অশোক অপর্ণার মুখে দেবীকার কথা শুনে বুঝতে পারলাে দেবীকার অনুতাপের কথা। কিন্তু শুধু মনে পড়ে যায় সেদিনের অপমানের কথা। সেদিন রাস্তায় অশােক যেখানে ছােটো হয়েছিল জীবনে আর কোনদিন সেরূপ অপমানিত সে হয়নি। অতএব মনােবাসনা পূর্ণ হল না।

অপর্ণা দেবীকাকে একদিন তার বাড়ী নিয়ে এলাে। দেবীকা বাড়িতে প্রবেশ করেই  দুচোখ দিয়ে শুধুমাত্র অশােককে খুঁজে বেড়ায়। কিন্তু কোথাও অশােকের দেখা নেই। শেষে অধৈর্য হয়ে দেবীকা অপর্ণাকে তার দাদার কথা জিজ্ঞাসা করে। অপর্ণা দাদার ঘরের দিকে আঙুল দেখিয়ে দেয়। দেবীকা ধীর পদক্ষেপে দৃঢ় চিত্তে জয়ের বাসনা নিয়ে দরজার দিকে এগােতে থাকে। প্রবেশের মুখেই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। দেখে বিছানায় অশােক ছটফট করছে আর বীথিকা তার পাশে বসে তার মাথায় হাত দিচ্ছে। দেবীকা আড়ালে সরে গিয়ে সব দেখতে লাগলাে। শুনতে পেল অশােক বলছে। ‘বীথিকা শােভন কেন এল না? ওকে এইসময় আমার বিশেষ দরকার। শােভন আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ বন্ধু, আর তুমি তার ভাবী বধু, আমার বােন বীথিকা তুমি কত স্নেহশীলা, তুমি কত সুন্দর।

বীথিকা অশােককে চুপ করিয়ে ডাক্তারের দেওয়া ঔষধ খেতে দেয়। ইতিমধ্যে শােভন এসে দেখে দেবীকা দরজার পাশে দাঁড়িয়ে। সে তাকে হাত ধরে নিয়ে ধরে প্রবেশ করে। অশােক দেবীকাকে দেখে চমকে ওঠে। কিন্তু পরক্ষণেই মুখ ঘুরিয়ে নেয়। বীথিকা ও শোভন তাদের ঘরে বসিয়ে অপর্ণার ঘরে যায়। সঙ্গে সঙ্গে দেবীকা ডুকরে কেঁদে ওঠে। আর হাত জোড় করে ক্ষমা প্রার্থনায় ভঙ্গিতে অশােককে ডাকতে থাকে। অশােক দেবীকার দিকে আজ অনেকদিন পর তাকিয়ে দেখলাে, দেবীকা আগের থেকে অনেক সুন্দরী হয়েছে। দেবীকা একসাথে অনেক কথা বলতে চায় কিন্তু কিছুই। বলতে পারে না। শুধুমাত্র তাদের দুজনের হাত পরস্পরের হাতের মুঠোর মধ্যে থাকে। ইতিমধ্যে শােভন ও বীথিকা অশােকের কাছে এসেছে। কিন্তু অপর্ণা শােভনের বােন দেবীকাকে কোনমতে এবেলা বাড়ী যেতে দিল না। দেবীকার এই প্রথম অশােকদের বাড়ী থাকা।

 

সতেরো

অশােক যখন নিদ্রাচ্ছন্ন হল তখন অপর্ণা ও দেবীকা গৃহকর্মে যুক্ত হল। মাসীমা, মেসােমশায় অর্থাৎ অশােকের বাবা মা দুজনেই দেবীকাকে খুব ভালােবাসেন। দেবীকাকে কাছে পেয়ে তাদের আর আনন্দের সীমা নেই। দেবীকাকে কাছে বসিয়ে তারা গল্প করলেন। খাওয়া দাওয়া সারা হওয়ার পর দেবিকা আর একবার অশােকের সঙ্গে দেখা করতে গেলে অশােক তাকে চুম্বনে সিক্ত করল। তাদের ভুল বােঝাবুঝির অবসান হল।অশােকের বিছানায় বসে দেবীকা তার মনের গভীরে আশঙ্কার জল ঢুকতে লাগল। হঠাৎ সে দেখলাে অশােক পৃথিবীতে নেই। সে নিঃসঙ্গ একাকী। পৃথিবীতে তবে থাকার আর কোন আশা আকাঙ্খা নেই। শুধুমাত্র মরুপ্রান্তর। দেখলাে অশােক ভেসে চলেছে অজানা পৃথিবীর উদ্দেশ্যে।

তাকে ফেলে একা রেখে। হায়রে অবুঝ প্রেম। প্রেমের রূপ এরূপই হয়ে থাকে। যাকে তুমি আপন হৃদয়ের অন্তঃস্থলে ঠাঁই দিয়েছ তার অমঙ্গল চিন্তা  আগে আসবে মনে, তবেই তােমার সার্থক ভালােবাসা। প্রিয় যখন কাছে থাকে তখন তাকে অবজ্ঞা কর না, প্রিয় দূরে গেলে প্রিয় আরও প্রিয় হয়ে ওঠে এই হল অবুঝ প্রেম।দেবীকার হঠাৎ মনে হল সে মৃত অশােকের পাশে বসে। সে ভয়ে আর্তনাদ করে ঘুমন্ত অশােককে জড়িয়ে ধরলাে নিজের শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে। ঘুমন্ত অসু্থ অশােক তখন স্বপ্ন দেখে গোলাপ ফুলের মত দেবীকার সুন্দর মনের। সে অনেক কিছুই দিল দেবীকাকে। দেবীকা নিশ্চিন্ত হল অশােক মরেনি।

অরিন্দম তার গতবারের অভিনয়ের বদনাম ঘুচিয়ে চার রাত্রিতেই সর্বশ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান নিয়ে ফিরলেন। আর সঙ্গে নিয়ে ফিরলাে দশ হাজার টাকা। ফিরে এসে প্রথমেই অরিন্দম অপরূপার সঙ্গে দেখা করতে গেল। অপরূপা অরিন্দমকে দেখেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে অরিন্দমকে জড়িয়ে ধরলাে। অরিন্দম তার জয়ের কথা অপরূপাকে বলল তারপরে গােপালবাবুর কাছে গিয়ে শরীরের উত্তাপ এবং হার্টবিট দেখে অপরূপাকে অন্য ডাক্তার দেখাবার জন্য বললাে। অপরূপা অর্থের অভাবে অন্য ডাক্তার আনার ভরসা পাচ্ছিল না। অরিন্দম একথা বুঝতে পেরে নিজে গিয়ে কলকাতা থেকে বড় ডাক্তার নিয়ে এলাে।।

যেদিন অরিন্দম কলকাতা থেকে ডাক্তার নিয়ে এলাে সেইদিন এসেই দেখতে পেল সুদর্শন সান্যালের ডাক্তার গোপালবাবুকে দেখছেন। অরিন্দম ডাক্তারবাবুকে অপরূপার ঘরে বসিয়ে রেখে তাকে আপ্যায়ণ করার জন্য অপরূপাকে বলল। সুদর্শন সান্যাল ডাক্তার নিয়ে চলে যাবার আগে ফি বাবদ টাকা অপরূপার কাছে নিতে আসে। সেদিন টাকা নিতে এসে অন্য আর একজনকে দেখে সুদর্শন সান্যাল অপরূপাকে বাইরে ডাকলাে। আর ঠিক সেইসময় সুদর্শন সান্যাল তার মনের বাসনা চরিতার্থ করার জন্য অপরূপাকে জড়িয়ে ধরে বলল “অপরূপা আমি তােমায়” কথা আর শেষ হতে হল না। অপরূপার চিৎকার অরিন্দম এসে সুদর্শন সান্যালের কেশ আকর্ষণ করে অপরূপার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে বলল।

প্রত্যুত্তরে সুদর্শন সান্যাল কে থেকে ভোজালি বের করে অরিন্দমের প্রতি অগ্রসর হতে থাকল।  আগত বাবু একটি লাঠি ছুড়ে অরিন্দমকে সূদর্শন সান্যালের থেকে রক্ষা করলেন। সুদর্শন সান্যাল সুযােগ বুঝে পালালো। কলকাতা থেকে আগত ডাক্তারবাবু তারপর রোগীর কাছে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা ব্যাপী গোপালের শরীর পর্যবেক্ষণ করে বললেন একে ড্রাগ এডিকেটেড করা হয়েছে । এর প্রেসার একটু বেশি হলেও অন্য কোন কঠিন ব্যাধি নেই এবং পরিকল্পপনা মাফিক একে রোগী বানিয়ে রাখা হয়েছে। এর প্রেসার বাড়িয়ে,ওষুুুুধ না দিয়ে  প্রতিদিন তাকে মেরে দেবার চক্রান্ত চলছিল। ভাক্তারবাবুকে ট্রেনে তুলে দেবার পর অরিন্দম সােজা নিজের বাড়ী গিয়ে  কথামত ঔষধপত্র কেনার জন্য শহরে গেল। প্রায় আড়াই মাস ব্যাপী চিকিৎসার ফলে গােপালবাবু প্রায় স্বাভাবিক ও সুস্থ হয়ে উঠলেন এবং হাত ভরে অরিকে আশীর্বাদ করলেন। ঈশ্বরকে প্রণাম জানালেন এক বিরাট দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার জন্য।


লেখাটি শেয়ার করুন

Leave a Reply