রাতের ভীতি
বশির আহমদ।।
সাদাসিদে শ্যামল বরণ নীলকমল এক ছেলে
রাত্র নিশি দিন দুপুরে কবিতা নিয়ে খেলে।
পড়াশোনা যেমন করে তারও অধিক লেখে
রংতুলিতে অঙ্কন করে পল্লীবালা দেখে।
মনের রাজ্যে সাঁতার কাটে অপলকে চেয়ে
এমন সময় নজর পড়লো পাহাড়তলীর মেয়ে।
দেখার সাথেই একে নিল সেই মেয়েটির ছবি
কপালে তার এঁকে দিলো রক্তমাখা রবি।
তখন থেকে দিবাযামী তাকে মনে করে
সুখের জন্য নতুন বাসর স্বপ্নের মাঝে গড়ে।
ইচ্ছে ঘুড়ি আকাশ পানে উড়ল ডানা মেলে
মেঘের মত মুক্ত মনে উড়ে উড়ে খেলে।
আপন রাজ্যে শুরু হল প্রীতি ভালোবাসা
ভাবতে লাগল সুখের জন্য হরেক রকম আশা।
আস্তে আস্তে চোখের সাড়ায় নিজের কাছে টানে
মনের কথা বলে বেড়ায় কবিতা আর গানে।
হঠাৎ একদিন বায়না ধরে এল খুবই কাছে
কিছু কথা বললে যেন, আপন প্রাণ বাঁচে!
যেই ভাবনা সেই কাজ তিনি করল নীরব ক্ষণে
প্রেমের ঢোরে সঁপে দিল নীলকমলের সনে।
রঙিন স্বপন দেখতে লাগল দিবানিশি কালে
কেমন করে ঘরটি বাঁধবে, কোন সে মগডালে?
কল্পনাতে চলতে লাগল স্বপ্নিল সারাবেলা
দুর্বার বেগে ছুটে চলল নাহি কাজে হেলা।
দু’জন মিলে গড়বে সংসার পণ করল তাই মনে
সত্য শপথ রাখবে অটুট গোধূলির ঐ ক্ষণে।
বিশ্বাস নিয়ে যাত্রার তরে মাস্তুল তুলল নায়ে
দু’জনার ঐ বাঁধন খানি এগিয়ে যায় পায়ে।
ভুলের জন্য নিভে না যে, আশার প্রদীপখানি
ইহার তরেই কষ্ট শুধু মনে পেরাশানী।
হঠাৎ একদিন হানল আঘাত নীরব চুপিসারে
বাতায়নে করল সবই চৌকি রেখে দ্বারে।
আগল বারণ নাহি শুনে ছিল যত বাঁধা
ফন্দি ফিকির করে সে যে দিল চোখে ধাঁধা।
নীলকমল তাই হতভম্ব নাহি কিছু বুঝে
সত্য তালাশ করতে কেবল দিবারাত্র খুঁজে।
বিশ্বাস ছিল যাবে না সে অন্য কোনখানে
ভাবনা যে মিথ্যা হল কষ্ট আঘাত হানে।
কথা ছিল দেবেনা কল রাত দশটার পরে
তবে একদিন দিলেন কল আইন ভঙ্গ করে!
দেখতে পেল বলছে কথা নিশি রাতের কালে
ততক্ষণে ভাঙ্গল মাস্তুল ছিড় ধরল সেই পালে।
চোখের তারায় ভাসতে লাগল অবাঞ্চিত স্মৃতি
কেমন করে ভাঙ্গল বিশ্বাস ইহা কেমন রীতি?
কত কসম শপথ ছিল সবই গেল বৃথা
বুকের মাঝে জ্বলে উঠল রাবনের ঐ চিতা!
সেদিন থেকে নীলকমন পণ করিল মনে
আর কাউকে বিশ্বাস করবে না, প্রেম’ না কারও সনে!