মোঃ সুমন আহমেদ

অচিনপুর ও বোকাপাখি

প্রবন্ধ, মতামত
লেখাটি শেয়ার করুন

উন্মাদ।।

 

উপমহাদেশের  মুসলমান/ হিন্দুদের  ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, সমসাময়িক  রাজনীতি নিয়ে জ্ঞান অর্জন করাটাও প্রায় ততোটা গুরুত্বপূর্ণ।ধার্মিকেরা ধর্মীয়  বিদ্বেষ ছড়াতে পারেনা,ছড়ায়না। রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে একদল এই কাজটা করে থাকে। সমস্যা হচ্ছে কোনো একটা ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক ইস্যু সামনে এলেই রাজনীতি না বোঝা একদল হুজুগে ধর্ম উদ্ধারের নামে উগ্রবাদী আচরণ শুরু করে, এটা মোটেই কাম্য নয়। তীব্র  ধিক্কার জানাই তাদের, যারা স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে সম্প্রীতি  নষ্ট করতে চায়।

কুমিল্লা ইস্যু নিয়ে  অনুমানের উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগত অভিমত  কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের হিন্দু/ মুসলিম ধর্মীয় উদ্দেশ্যে এহেন গর্হিত কাজ করেনি। এটা যে  রাজনৈতিক ব্যাপার তা বোঝার জন্যে রকেট সাইন্স বোঝা লাগেনা, উপমহাদেশের রাজনীতি ও সংখ্যালঘু নিয়ে টুকটাক পড়াশোনা করলেই বোঝা যায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক  দল নির্বাচনকে সামনে রেখে  “সংখ্যালঘু ও ধর্মীয় আবেগ”  নিয়ে তাদের দাবার গুটি সাজিয়ে থাকে এটা ওপেন সিক্রেট। এতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে দাঙ্গা হাঙ্গামা বাধিয়ে দিতে পারলেই তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়। এটা যতদিন না সাধারণ মানুষ বুঝতে শিখবে ততোদিন সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগরিষ্ঠ দুই শ্রেনীর মানুষই ধর্মের রাজনীতির গ্যাড়াকলে পড়ে ধুঁকতে থাকবে।  আপনাদের কাছে অনুরোধ  হুজুগে পড়ে উগ্রতা ছড়াবেননা, গালিগালাজ করবেননা, আক্রমণাত্মক আচরণ করবেন না।

পুনশ্চঃ কলেজে পড়াকালীন যে মেসে ছিলাম সেইখানে ৫জন হিন্দু ৪ জন মুসলিম থাকতাম। কোনোদিন ভুলক্রমেও ধর্মীয় কটুক্তি/ বিদ্বেষমূলক একটা শব্দও আমাদের নিজেদের মধ্যে বিনিময় হয়নি। উল্টো ধর্মীয় শ্রদ্ধাবোধের জায়গা থেকে তারা আড্ডায় মজে থাকলেও আমার নামাজের সময় হলেই অফ করে দিয়েছে তেমনিভাবে তাদের প্রার্থনার সময়ে আমরাও তাই করেছি। এদের মধ্যে একজনের সাথে সুদীর্ঘ সাড়ে ৫ বছরের সম্পর্ক এত্তদিন একসাথে থাকার পরেও আমাদের মধ্যে ভুলক্রমেও কোনোদিনও বিন্দুমাত্র ধর্মীয় কটুক্তি/ বিদ্বেষমূলক বাক্যবিনিময় হয়নি। উল্টো জানার আগ্রহ থেকে আমাদের মধ্যে একে অপরের ধর্মের বেসিক ব্যাপারগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে বহুবার।  উনি প্রতিদিন দুপুরে স্নান শেষে গীতা পাঠের সময় আমি অপেক্ষা করি, শেষ হলে একসাথে খাবার খাই। তেমনিভাবে আমি নামাজ পড়তে গেলে তিনি অপেক্ষা করে, শেষ হলে একসাথে বাইরে যান। উনার মত আমার  পরিচিত ম্যাক্সিমাম হিন্দু ধর্মাবলম্বী ধর্মীয় + রাজনৈতিক জ্ঞানসম্পন্ন তারা কখনই ধর্মীয় বিদ্বেষ/ উগ্রতাকে সমর্থন করেনা, আমার মত তারাও এহেন গর্হিত কাজকে ধিক্কার জানাই।

*মাইন্ড ইট রিলিজিয়ন ইজ ফা*ড বাই পলিটিক্স।*


লেখাটি শেয়ার করুন

One thought on “অচিনপুর ও বোকাপাখি

Leave a Reply