জান্নাতুল ফেরদাউস লাকি

দ্য ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী

বুক রিভিউ
লেখাটি শেয়ার করুন

জান্নাতুল ফেরদাউস লাকি।।

 

(দ্য ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী,লেখক: আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, অনুবাদ: সৌরীন নাগ)

 

প্রখ্যাত মার্কিন লেখক আর্নেস্ট হেমিংওয়ের নোবেল জয়ী উপন্যাস ‘দ্য ওল্ড ম্যান এন্ড দ্যা সী’র বুড়ো মেছুড়ে সান্তিয়াগো টানা ৮৪ দিন মাছ ধরতে ব্যর্থ হবার পরও বিশ্বাস করতো আশা না করাটাই মূর্খামি। আশা হারিয়ে ফেলা পাপ।

জীর্ণতা,ক্লান্তি,ক্ষুধার্ত শরীর নিয়ে পঁচাশিকে পয়া সংখ্যা মেনে সে আবার বেড়িয়ে পড়ে সমুদ্রে। সমুদ্রের অনেক গভীরে গিয়ে সকল কৌশল কাজে লাগিয়ে মারলিন প্রজাতির একটা বড় মাছকে টোপ গেলাতে সক্ষম হয়। টানা তিনদিন ধরে মাছটার সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে বুড়ো সান্তিয়াগো বুঝতে পারে এটা সাধারণ আকারের কোনো মাছ নয় বরং এটা তার নৌকার চেয়ে বড়। মাছটা চাইলেই তার নৌকা ভেঙ্গে লণ্ডভণ্ড করে দিতে পারে। ভয়ে কেঁপে উঠলেও পরক্ষণে বুড়ো সান্তিয়াগো ভাবে- মানুষ হারার জন্য জন্মায়নি। মানুষ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে তবু হারবেনা।

তিনদিন ধরে সুতো খেলাতে খেলাতে মাছটি ক্লান্ত হলে সে শরীরের সব শক্তি ব্যয় করে মাছটিকে মারে। আর ভাবে- আত্মরক্ষার্থে পৃথিবীতে প্রতিদিন সবাই সবাইকে কোনো না কোনোভাবে মারছে।

দীর্ঘ সুতো টানা রক্তাক্ত হাত-পিঠ নিয়ে মাছটিকে নৌকার সাথে বেঁধে দ্বীপে ফেরার জন্য নৌকা বাইতে থাকে বুড়ো।

দি_ওল্ড_ম্যান_অ্যান্ড_দ্য_সী

কিন্তু রক্তের গন্ধ পেয়ে বিভিন্ন শ্রেনীর হাঙর বারবার হানা দেয় নৌকায়। মাছটিকে বাঁচাতে বৈঠা, ছুরি, হরপুনের ফলা দিয়ে হাঙরের সাথে লড়ে সান্তিয়াগো।

শেষমেশ তার সকল অস্ত্র সমুদ্রের বুকে চুত হয়। এক ঝাঁক হাঙর নিরস্ত্র সান্তিয়াগোর মাছটি কামড়ে কামড়ে শেষ করে দেয়।

তবুও আঠারো ফুট লম্বা মাছটির হাড়-কঙ্কাল আর মৃত প্রায় শরীর নিয়ে মাঝ সমুদ্র থেকে দ্বীপে পৌঁছায় সান্তিয়াগো।
আর এতো বড় মাছ দ্বীপের কেউ কখনই দেখেনি।
এই গল্পের নায়ক কে বোঝা যায় না। কখনও মনে হয় জীর্ণশীর্ণ সেই বৃদ্ধ, প্রতিকূলতা যার নিত্যসঙ্গী। প্রকৃতির প্রতিকূলতার সাথে যুদ্ধ করে হার না মানা বুড়ো সান্তিয়াগো আবার কখনও মনে হয় উত্তাল সমুদ্র যে বুক দিয়ে আগলে রাখে হাজারো প্রজাতির প্রাণী। সান্তিয়াগো সমুদ্রের বুক থেকে মাছটিকে মেরেছিলো ঠিকই কিন্তু তীরে আনতে পারেনি। এনেছে হাড়গোড়, কঙ্কাল। মাছটি সমুদ্রের বুকেই আছে হাঙরগুলো ভিতর দিয়ে।



লেখাটি শেয়ার করুন

Leave a Reply